লিভারের রোগ জন্ডিসের প্রধান কারণ। আমরা যা কিছুই খাই না কেন, তা লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়। তাই জন্ডিসের প্রাথমিক অবস্থায় কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার দিতে বলা হয়। এই খাবার বমি-বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে এবং খাবারের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট সহজে হজম হয়। এই সময়ে খুব বেশী প্রোটিন এবং ফ্যাটযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভাল। প্রোটিন হজম হতে সময় লাগে এবং ফ্যাট হজম হতে আরও বেশী সময় লাগে। তাতে লিভারের উপর চাপ পড়ে, সেই কারণেই অসুস্থ অবস্থায় বেশী প্রোটিন বা ফ্যাট বর্জন করাই ভাল। তবে একেবারে সেদ্ধ খাবারের কথাও বলা ঠিক নয়। কারণ এমনিতেই জন্ডিসে খাওয়ায় অরুচি থাকে। তাই সেই সময় শুধু সেদ্ধ খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না। এজন্য রান্নায় খুব অল্প পরিমাণ তেল ও মশলা ব্যবহার করা যেতে পারে যাতে খাবারটি সুস্বাদু হয় এবং রোগী তা খেতে পারেন।
একনজরে জন্ডিস আক্রান্ত রোগীর পথ্যঃ-
১) সহজপাচ্য খাবার খাবেন।
২) ভাত, ডাল (পাতলা), সবজি, অল্প পরিমাণে ছোট মাছও খাবেন।
৩) পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল খাবেন।
৪) রান্নায় অতিরিক্ত তেল, মশলা বা ঘি ব্যবহার করবেন না।
৫) টাটকা খাবার খাবেন।
৬) জন্ডিস হলে অতিরিক্ত নয়, পর্যাপ্ত সাধারণ পানযোগ্য পানি পান করবেন।
৭) আখের রস আমাদের দেশে জন্ডিসের একটি বহুল প্রচলিত ওষুধ। অথচ সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে রাস্তার পাশের যে দূষিত পানিতে আখ ভিজিয়ে রাখা হয়, সেই পানি মিশ্রিত আখের রস খাওয়া থেকে হেপাটাইটিস ‘A’ বা ‘E’ ভাইরাস মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। সুতরাং সাবধান, তবে বাড়ীতে তৈরী যে কোন ফলের রসই খাওয়া যেতে পারে।
৮) মদ্যপান একেবারে বাদ দিতে হবে।
৯) আমাদের দেশে সাধারণ একটা বিশ্বাস আছে যে, রান্নায় হলুদ খেলে জন্ডিসের হলুদ ভাব আরো বাড়বে। এই বিশ্বাসের কোন ভিত্তি নেই।
১০) পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেবেন।